আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল
খুলনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) পথপ্রদর্শক শক্তি — দৃঢ় নেতৃত্ব এবং তৃণমূল পর্যায়ের সেবার প্রতীক
একজন দূরদর্শী ও আদর্শবাদী নেতা যিনি সমাজসেবা এবং ছাত্র রাজনীতিতে গভীরভাবে সম্পৃক্ত, গণতন্ত্র, যুব ক্ষমতায়ন এবং খুলনার উন্নয়নের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
পরিচিতি
আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল- খুলনা অঞ্চলের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর কান্ডারি, সংগ্রামী নেতৃত্বের প্রতীক এবং গণমানুষের প্রিয় মুখ। তিনি শুধু একজন রাজনীতিবিদ নন, একজন স্বপ্নবাজ, আদর্শবাদী এবং তৃণমূলের সাথে নিবিড়ভাবে যুক্ত নেতা। তাঁর জীবন কাহিনি একদিকে যেমন সাহসিকতা ও আদর্শের গল্প, তেমনি অন্যদিকে জনগণের প্রতি অটল দায়বদ্ধতার দলিল।
শৈশব ও পারিবারিক প্রেরণা:
খুলনার খালিশপুরে জন্মগ্রহণ করেন আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল। তাঁর বেড়ে ওঠা হয় সাধারণ মানুষের কোলাহল, সংগ্রাম ও বাস্তবতার ভেতরেই।
- তাঁর পিতা ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম। স্বাধীনতার জন্য জীবনবাজি রাখা এই মানুষটির আদর্শ, দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগ ছোটবেলা থেকেই বকুলকে প্রেরণা জুগিয়েছে।
- পরিবারে দেশপ্রেমিক চেতনা, সততা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার পরিবেশ তাঁকে রাজনীতিতে এগিয়ে যাওয়ার শক্ত ভিত তৈরি করে দেয়।
শিক্ষাজীবন:
শিক্ষাজীবনে শুরু থেকেই তিনি ছিলেন মেধাবী ও অধ্যবসায়ী।
- প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন রোটারি স্কুল থেকে।
- মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন খালিশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
- উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন খুলনা বিএল কলেজে।
- ১৯৮৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান- যা তাঁর মেধা ও যোগ্যতার এক উজ্জ্বল প্রমাণ।
ছাত্ররাজনীতি ও প্রাথমিক নেতৃত্ব:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তিনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতির সাথে যুক্ত হন।
- ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রদলের কর্মী হিসেবে রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেন।
- ক্রমান্বয়ে দায়িত্ব পান:
- হল কমিটির সহ-সভাপতি (১৯৮৬–৮৭)
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক (১৯৮৮–৮৯)
- ডাকসু নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে ফজলুল হক হল ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক (১৯৯০–৯১)
এই সময়েই তিনি প্রমাণ করেন নেতৃত্ব কেবল পদ নয়, এটি কর্মীদের আস্থা ও ভালোবাসায় গড়ে ওঠে।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে উত্থান:
ছাত্ররাজনীতির দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তাঁকে জাতীয় রাজনীতির জন্য প্রস্তুত করে।
- দু’বার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন (১৯৯৭-৯৮, ১৯৯৮-৯৯)।
- দলকে সংগঠিত করা, কর্মীদের প্রেরণা জোগানো এবং আন্দোলনকে সফল করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল অসামান্য।
জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ:
দীর্ঘ সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তে তাঁকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক পদে মনোনীত করা হয়।
- এটি শুধু একটি দায়িত্বই নয়, বরং বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের তাঁর প্রতি আস্থার প্রতীক।
- এ দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তিনি শুধু ছাত্র রাজনীতি নয়, বরং জাতীয় রাজনীতিতেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন।
নির্বাচনী এলাকা ও স্থানীয় ভূমিকা:
খুলনা-৩ (জাতীয় সংসদীয় আসন নং ১০১)- যার মধ্যে খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহান আলী থানা অন্তর্ভুক্ত- এই অঞ্চল তাঁর নির্বাচনী ঘাঁটি।
- একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন।
- তিনি খুলনা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
- তাঁর নেতৃত্বে খুলনা বিএনপি সাংগঠনিকভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
সংগ্রাম, নিপীড়ন ও অটল অবস্থান:
আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুলের রাজনৈতিক জীবন কখনোই সহজ ছিল না।
- বারবার রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, হয়রানি ও মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন।
- ২০২৪ সালের মার্চ মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার হন। পরে দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভ করেন।
- একই বছরের ৫ আগস্ট, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগের দিন তাঁর খুলনার নিজ বাড়িতে সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়- ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। কিন্তু এসব নিপীড়ন তাঁকে দমাতে পারেনি; বরং তিনি আরও দৃঢ় হয়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
কর্মজীবন ও অবদান:
আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল কেবলমাত্র একজন রাজনৈতিক কর্মী নন, তিনি একজন দক্ষ সংগঠক, গণমানুষের প্রতিনিধি এবং সঙ্কট মোকাবিলার পরীক্ষিত নেতা। দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে তাঁর বিভিন্ন কর্মতৎপরতা তাঁকে আলাদা মাত্রায় তুলে ধরেছে।
- সাংগঠনিক পুনর্গঠন ও শক্তিশালী ভূমিকা:
- খুলনা বিএনপিকে দীর্ঘদিনের দমন-পীড়ন ও হয়রানির পর আবারও সংগঠিত করতে তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
- তৃণমূল পর্যায়ে কর্মী পুনর্গঠন, ইউনিট কমিটি গঠন ও সক্রিয় কর্মী তৈরির মাধ্যমে তিনি খুলনা মহানগর ও আশেপাশের অঞ্চলে বিএনপিকে নতুন উদ্যমে দাঁড় করিয়েছেন।
- ভাঙনকবলিত দলকে একত্রিত করে তিনি দেখিয়েছেন একজন নেতার সবচেয়ে বড় শক্তি হলো জনগণের আস্থা ও কর্মীদের ভালোবাসা।
- তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতিতে সম্পৃক্তকরণ:
- তিনি বিশ্বাস করেন, তরুণদের সম্পৃক্ততা ছাড়া কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন টেকসই হতে পারে না।.
- তাই নিয়মিতভাবে ছাত্র-যুব সমাজের সাথে মতবিনিময়, কর্মশালা এবং অনলাইন-অফলাইন কার্যক্রম আয়োজনের মাধ্যমে তাঁদের রাজনীতিতে ইতিবাচকভাবে যুক্ত করেছেন।
- খুলনা অঞ্চলে অনেক তরুণ তাঁর হাত ধরে সংগঠিত রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন এবং নিজেদেরকে আদর্শিকভাবে প্রস্তুত করছেন।
- সামাজিক ও মানবিক উদ্যোগ:
- রাজনীতির পাশাপাশি তিনি সমাজসেবামূলক কাজেও সমানভাবে সক্রিয়।
- দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, বই ও শিক্ষাসামগ্রী সরবরাহ করেছেন।
- অসহায় ও অসুস্থ মানুষদের চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছেন, বিশেষ করে করোনাকালে তিনি সরাসরি খাদ্য ও ওষুধ বিতরণে ভূমিকা রাখেন।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন সাইক্লোন বা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পাশে দাঁড়িয়ে ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।
- রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও জনআস্থা অর্জন:
- বিএনপির নেতৃত্বে তাঁর প্রতি যে আস্থা তৈরি হয়েছে, তার বড় কারণ তাঁর ত্যাগ, সততা ও সাহস।
- খুলনা অঞ্চলের মানুষ তাঁকে একজন সৎ, নির্ভীক ও সহজ-সরল নেতারূপে চেনে, যিনি ক্ষমতার জন্য নয় বরং মানুষের অধিকারের জন্য রাজনীতি করেন।
- তাঁর নেতৃত্বে খুলনা বিএনপি আবারও আন্দোলনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং গণআন্দোলনে শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
একজন আদর্শনিষ্ঠ রাজনীতিবিদ হিসেবে আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুলের ভিশন সুস্পষ্ট ও বাস্তবসম্মত। তিনি কেবল বর্তমান নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও একটি গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চান।
- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা:
- দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা তাঁর প্রথম অঙ্গীকার।
- গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে (সংসদ, নির্বাচন কমিশন, বিচারব্যবস্থা) স্বাধীনভাবে পরিচালিত করতে আইনি ও সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ।
- একদলীয় শাসন বা স্বৈরাচারী প্রবণতার পরিবর্তে জনগণের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়াই তাঁর রাজনৈতিক দর্শন।
- ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠন:
- তিনি এমন একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা কল্পনা করেন যেখানে আইনের শাসন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হবে।
- বিচারপ্রার্থীরা যাতে আর্থিক বা রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়াই ন্যায়বিচার পান, সে জন্য বিচারব্যবস্থার পূর্ণ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।
- দমন-পীড়ন ও মিথ্যা মামলার রাজনীতি বন্ধ করে তিনি নাগরিক স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত করতে চান।
- তরুণ প্রজন্মের ক্ষমতায়ন:
- তরুণদের শিক্ষিত, দক্ষ ও কর্মসংস্থানে সক্ষম করে গড়ে তোলার জন্য তিনি বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিতে চান।
- প্রযুক্তি ও আধুনিক শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে তরুণদের বিশ্বমানের প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করা তাঁর অঙ্গীকার।
- উদ্যোক্তা উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ঋণ সুবিধা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে বেকারত্ব কমাতে চান তিনি।
- খুলনার উন্নয়ন ও স্থানীয় সমস্যা সমাধান:
- খুলনার শিল্পাঞ্চল পুনরুজ্জীবিত করা এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া কলকারখানা পুনরায় চালু করা তাঁর প্রধান লক্ষ্য।
- নদীভাঙন, জলাবদ্ধতা ও পরিবেশগত সমস্যা মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
- স্থানীয় কৃষক ও শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে আঞ্চলিক অর্থনীতি চাঙা করতে চান।
- সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন:
- একটি আধুনিক, আত্মনির্ভরশীল ও মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্র গঠনই তাঁর স্বপ্ন।
- জনগণের স্বাধীন মতপ্রকাশ, রাজনৈতিক অধিকার ও মানবাধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে এই বাংলাদেশে।
- অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের সমন্বয়ে একটি সমান সুযোগের সমাজ গড়ে তোলা তাঁর চূড়ান্ত লক্ষ্য।
পরিশেষে বলা যায়, আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল আজ কেবল খুলনা নয়, সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের কাছে সংগ্রামী, আদর্শবান ও নির্ভীক নেতৃত্বের প্রতীক। তাঁর লক্ষ্য- একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, যেখানে প্রতিটি মানুষ মর্যাদার সাথে বাঁচতে পারবে।